#সম্পূর্ণ_লাদাখ_ভ্রমণ_গাইড (#তৃতীয়_পর্ব ) – #লাদাখে_দেখার_কি_কি_আছে ?
#সম্পূর্ণ_লাদাখ_ভ্রমণ_গাইড – #তৃতীয়_পর্ব – #লাদাখে_দেখার_কি_কি_আছে ?
লাদাখের সবথেকে বড় আকর্ষণ হলো এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । জনমানবিহীন রুক্ষ প্রকৃতির অসামান্য রূপের টানেই পর্যটকরা ছুটে আসেন লাদাখে । এই পর্বে আমরা জানবো লাদাখের দেখার কি কি আছে এবং সেই দর্শনীয় স্থান গুলো পুরো লাদাখ জুড়ে কোথায় কোথায় ছড়িয়ে আছে ?
লাদাখের সব দর্শনীয় স্থান গুলো মোটামুটি ৯ টা জায়গায় বা জোন এ ছড়িয়ে আছে ( নিচে ১ নং চিত্র দেখুন ) ।
জোন ১: শ্রীনগর থেকে লে যাবার পথ বরাবর
জোন ২: লে শহর ও তার আসে-পাশের সাইট – সিইং
জোন ৩: নুব্রা ভ্যালি
জোন ৪: প্যাংগং লেক
জোন ৫: হানলে
জোন ৬: সোমোরিরি লেক
জোন ৭: সকার লেক
জোন ৮: সকার লেক দেখে মানালি পর্যন্ত ফেরার পথের অসাধারন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য
এবং জোন ৯: তুলনায় কম জনপ্রিয় কার্গিল এর কাছে এরিয়েন ভ্যালি বা আর্য উপত্যকা তে অবস্থিত হানু এবং দা গ্রাম
এবার জেনে নেবো কোন জোনে কি কি দেখার আছে ( ২ নং চিত্র দেখুন )|
জোন ১: শ্রীনগর থেকে লে যাবার পথ বরাবর :
শ্রীনগর থেকে গাড়িতে লে যাবার পথে কার্গিল পৌঁছানোর প্রায় ৫০ কিলোমিটার আগে পরে কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল । এরপর কার্গিল পেরিয়ে প্রথমেই পাবেন লামায়ুরু মনাস্ট্রি । লামায়ুরু থেকে লে এর দিকে আরও কিছুটা গেলে দেখতে পাবেন বিখ্যাত “মুন ল্যান্ড ” – একমাত্র এখানেই পাবেন ঠিক চাঁদের মতো ভূমিরূপ ।
লামায়ুরু র পরে অলচি মনাস্ট্রি এবং লিকির মনাস্ট্রি । এই দুই মনাস্ট্রি কিন্তু শ্রীনগর লে হাইওয়ে এর উপরে অবস্থিত নয় । শ্রীনগর থেকে লে যাবার সময় হাইওয়ে থেকে ডানহাতে কয়েক কিলোমিটার ভিতরে গেলে পাবেন অলচি মনাস্ট্রি । আর মেন রাস্তা থেকে বাঁ দিকে কিছুটা ভিতরে লিকির মনাস্ট্রি । এরপরে পাবেন নিমু – এখানে নীল জল এর সিন্ধু নদী আর ঘোলা জল এর জাঁসকার নদীর সঙ্গম । এই জাঁস্কার নদীর জল শীতকালে জমে বরফ হয়ে গেলে – তার উপর দিয়ে হয় চাদর ট্রেক । নিমুর পরে পাবেন ম্যাগনেটিক হিল – তারপর পাত্থর সাহিব গুরুদোয়ারা হয়ে পৌঁছে যাবেন লে শহর ।
এখানে বলা দরকার এই সবকটি জায়গা শ্রীনগর থেকে গাড়িতে আসার সময় দেখে নেওয়া যায় । অন্য দিকে আপনি যদি দিল্লি থেকে বা শ্রীনগর থেকে প্লেনে লে আসেন এবং ফিরে যান – তাহলে কিন্তু এই জায়গা গুলো দেখার জন্য লে থেকে একদিন সাইট – সিইং করতে হবে।
জোন ২: লে শহর ও তার আসে-পাশের সাইট – সিইং
লে শহরের কাছাকাছি আছে শান্তি স্তুপ এবং লে প্যালেস ।
এছাড়াও লে থেকে এক দিনের সাইট সিইং এ দেখা যায় হল অফ ফেম – রাঞ্চো স্কুল – শে মনাস্ট্রি – থিকসে মনাস্ট্রি এবং হেমিস মনাস্ট্রি ।
জোন ৩: নুব্রা ভ্যালি
লে থেকে খারদুংলা পাস পেরিয়ে নুব্রা ভ্যালি । নুব্রা ভ্যালি তে দুটি প্রধান নদী – শায়ক নদী এবং নুব্রা নদী । নুব্রা ভ্যালি তে শায়ক নদীর তীর বরাবর অবস্থিত ডিস্কিট মনাস্ট্রি – তারপর হুন্ডার এর শীতল মরুভূমি বা কোল্ড ডেজার্ট – তারপর পাকিস্তান সীমান্তে তুরতুক ও থাং গ্রাম । আর নুব্রা নদীর তীর বরাবর সুমুর আর পানামিক গ্রাম ।
জোন ৪: প্যাংগং লেক
লাদাখের সব থেকে জনপ্রিয় জায়গা প্যাংগং লেক লাদাখের পূর্ব দিকে অবস্থিত । এই প্যাংগং লেকের জল জানুয়ারী মাসে জমে বরফ হয়ে গেলে এখানে স্কি করা যায় । এমনকি জমে বরফ হয়ে যাওয়া প্যাংগং লেকের উপর দিয়ে বাইক ও চালানো যায় ।
জোন ৫: হানলে
প্যাংগং এর দক্ষিণ পূর্বে হানলে। এই হানলে থেকে সারা ভারতের মধ্যে সবথেকে ভালো মিল্কি ওয়ে বা ছায়াপথ দেখা যায় । যারা আস্ট্রো – ফোটোগ্রাফি করেন তাদের জন্য হানলে হলো স্বর্গ । এখানে আছে Indian Astronomical Observatory র হিমালয়ান চন্দ্র টেলিস্কোপ । এই টেলিস্কোপ টি কিন্তু বেঙ্গালুরু থেকে অপারেট করা হয় ।
জোন ৬: সোমোরিরি লেক
হানলের কাছেই লাদাখের সব থেকে সুন্দর নীল জল এর লেক সোমোরিরি । বলা হয় পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর জল রং দেখা যায় এই সোমোরিরি তে । আকাশ পরিষ্কার থাকলে নীল রং এর ৫ থেকে ৭ রকম শেড দেখতে পাবেন এই সোমোরিরি লেকের জলে ।
জোন ৭: সকার লেক
সোমোরিরি লেকের উত্তর পশ্চিমে আর এক নোনা জল এর লেক সকার । একেবারে লে মানালি হাইওয়ের পাশেই ।
জোন ৮: সকার লেক দেখে মানালি পর্যন্ত ফেরার পথের অসাধারন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য
সকার লেক দেখে আপনি যদি মানালি হয়ে ফেরেন তাহলে এই রাস্তার অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আপনাকে সম্মোহিত করবে । প্রকৃতি আর ঈশ্বর এখানে একাকার হয়ে গেছে । এই রাস্তায় পাবেন লাচুং লা – নাকি লা – বারালাচা লা আর রোটাং লা । আর পাবেন বিখ্যাত গাটা লুপ । সারচুতে সারাপ নদীর পাড়ে দেখতে পাবেন মাইলের পর মাইল মিশরীয় ভাস্কর্য্য । বারালাচা লা এর কাছে পাবেন ১৬০০০ ফুট উঁচুতে সুরাজ তাল – যেখান থেকে ভাগা নদী বেরিয়ে তান্দি তে এসে চন্দ্রতাল থেকে আসা চন্দ্র নদীর সাথে মিশেছ – সৃষ্টি হয়েছে চন্দ্রভাগা নদীর । এছাড়াও এই পথে পড়বে দীপক তাল ।
জোন ৯: তুলনায় কম জনপ্রিয় কার্গিল এর কাছে এরিয়েন ভ্যালি বা আর্য উপত্যকা তে অবস্থিত হানু এবং দা গ্রাম
শ্রীনগর থেকে লে আসার সময় কার্গিল থেকে যে রাস্তাটা বাটালিকের দিকে চলে গেছে সেই রাস্তায় আরও কিছুটা গেলে পাবেন সিন্ধু নদীর পাড়ে দা এবং হানু নামের দুটি গ্রাম। কথিত আছে এই গ্রামের বাসিন্দারা আলেকজান্ডারের সাথে ভারতবর্ষে এসেছিলেন এবং তার পরথেকে বংশ পরম্পরায় এখানে থেকে গেছেন। তাই এনারা খাঁটি আর্য । এই জায়গাটি আর্যদের উপত্যকা নাম পরিচিত।
মোটামুটি এই হলো খুব সংক্ষেপে লাদাখের দর্শনীয় স্থান এর তালিকা ।
লাদাখে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হলে এক বা একাধিক উঁচু পাহাড় পেরোতে হয় । পাহাড়ের উপর রাস্তার সব থেকে উঁচু জায়গা কে স্থানিয় ভাষায় বলা হয় “লা” – ইংরেজি তে পাস ।
পরের পর্বে আমরা আলোচনা করবো লাদাখের হাই মাউন্টেন পাস নিয়ে |
পরের পর্বের লিংক : লাদাখ ভ্রমণ গাইড (চতুর্থ পর্ব )
#ladakh #leh_adakh #ladakh_trip #ladakh_tour #ladakh_tour_guide #tsomoriri_lake #pangong_lake #nubra_valley #travel_with_Somjit #SomjitBhattacharyya #incredibleIndia